প্রিন্ট এর তারিখঃ Dec 6, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Dec 1, 2025 ইং
সখীপুরে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতিতে, অভিভাবকেরা নিচ্ছেন বার্ষিক পরীক্ষা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে অভিভাবক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অফিস সহায়ক দিয়েই নেওয়া হচ্ছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় মূল্যায়ন (বার্ষিক) পরীক্ষা। সোমবার সকাল থেকে উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এতে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বছর শেষে অভিভাবক ও অফিস সহকারীদের দিয়ে সন্তানদের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া মানতে পারছেন না অনেকেই। তবে প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন- অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনেই পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে।
শিক্ষক অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রেড ও পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা নিরসনের তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। এদিকে এক অফিস আদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষা (বার্ষিক পরীক্ষা) সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ কারণে তৈরি হয়েছে জটিলতা। অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে প্রধান শিক্ষকেরা পরীক্ষা নিতে বাধ্য হচ্ছেন, অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকেরা রয়েছেন দাবি আদায়ের কর্ম বিরতিতে। ফলে বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অভিভাবকদের দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন।
সখীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আসমা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সারা বছর বাচ্চাদের লেখাপড়া করিয়ে আজকে যদি অভিভাবকদের দিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হয় -এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের দাবি হলো- বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা পরীক্ষা নেবেন, তা না হলে পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এ সময় মাঠে অবস্থান করা অভিভাবকেরা তাঁর সঙ্গে সম্মতি প্রকাশ করেন।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার বলেন, আমরা ১০ম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলাম। এ নিয়ে আন্দোলনে ঢাকায় আমাদের একজন শিক্ষক নিহতসহ অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন। তাঁদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমরা দাবিগুলো ছাড়তে পারি না। সচিবালয় থেকে ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়ার জন্য আশ্বস্ত করেছিল, আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই আশ্বাসের পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা কোনো সুরাহা পাইনি, টালবাহানা করা হচ্ছে। এ কারণে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তে সারা দেশে একযোগে কর্মবিরতি পালন হচ্ছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিনা আক্তার বলেন, আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় পরীক্ষা নিচ্ছি।
উপজেলার কালমেঘা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল তালুকদার বলেন, উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সারা দেশের অধিকাংশ শিক্ষকেরা কর্মবিরতিতে রয়েছেন। আমাদের বিদ্যালয়েও অফিস সহায়ক দিয়ে প্রধান শিক্ষক একাই বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছেন। উপজেলার ইছাদিঘীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একই অবস্থা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিতে বলেছেন। সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলনে আছেন, তাঁরা সহযোগিতা না করলে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে বলেছেন। আপাতত বিকল্প পদ্ধতি হলো- প্রাক্তন শিক্ষার্থী অথবা গার্ডিয়ান (অভিভাবক) দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া। এ কারণে প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছে। আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষকদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃdailyprogotiralo.com