টাঙ্গাইল ৫ আসন (সদর) থেকে আগামী দিনের পরিবর্তনের লক্ষ্যে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান প্লেটো। তিনি একটি নিরাপদ, উন্নত, আধুনিক এবং শান্তিপূর্ণ টাঙ্গাইল গড়ার স্বপ্ন নিয়ে জনগণের সামনে এসেছেন। নিজেকে একজন উচ্চশিক্ষিত, বিনয়ী, সৎ এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, তিনি রাজনীতির পাশাপাশি আইন অঙ্গনেও প্রতিষ্ঠিত এবং জনসেবার মানসিকতা নিয়ে তিনি টাঙ্গাইলবাসীর কাছে আরও প্রিয় হয়ে উঠেছেন।
ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান প্লেটো জানান, তার বাবা হাজী এডভোকেট মাহমুদ আলম টাঙ্গাইল সদরের বাঘিল ইউনিয়নের ছিটকিবাড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি একজন সম্মানিত গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের একজন সম্মানিত আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত আছেন এবং টাঙ্গাইল জেলা বারের নিয়মিত সদস্য।
তাঁর মাতা সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট খালেদা পান্না বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও অন্যতম সংগ্রামী নেত্রী। এডভোকেট খালেদা পান্না ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা মহিলা দল এর আহবায়ক এবং জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর সফরসঙ্গী হিসেবে ১৯৭৯ সালে ইরান, তুরস্ক ও রোমানিয়া ভ্রমণ করেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ এবং ২০০৫ সালে তিনি দুইবার সংরক্ষিত মহিলা আসনের বিএনপির টাঙ্গাইল জেলার এমপি ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য থাকাকালীন ২০২০ সালে নিজ নামে প্রায় ৫০ টি মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
ব্যারিস্টার জিয়া শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রথম মন্ত্রিসভার সদস্য মরহুম আলহাজ্ব আব্দুর রহমানের দৌহিত্র। মরহুম আলহাজ্ব আব্দুর রহমান টাঙ্গাইল জেলার ভাসানী ন্যাপ এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ছিলেন। তিনি ছাত্র জীবনে ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এ যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে উনাকে গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করেন। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মৃত্যুবরণ করার পর ১৯৮১ সালে তিনি ধর্মমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মওলানা ভাসানীর খুব স্নেহভাজন ছিলেন এবং সারা বাংলদেশে আবদুর রহমান মন্ত্রীর সততার জন্য পরিচিত।
ব্যারিস্টার জিয়ার পরিবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার সাহস এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বকে মেনে দেশের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে আসছেন।
ব্যারিস্টার জিয়া গত ১৭ বছরের দুঃশাসনকে ইতিহাসের অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি গুম, হত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতি, টাকা পাচার এবং বিচারহীনতার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরে দেশকে ভয়াবহ সঙ্কটে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান দেখিয়ে দিয়েছে যে বাংলাদেশের জনগণ পরিবর্তন, ন্যায় এবং ভোটাধিকার চায়। জনগণ বিশ্বাস করে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে গুম-খুন-ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির অবসান ঘটবে। ভূমিদস্যুদের হাত থেকে টাঙ্গাইলের নিরীহ মানুষদের মুক্ত করবেন। নদী থেকে বালু উত্তোলন সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিয়ে বন্ধ করার ব্যবস্থা করবেন।
ব্যারিষ্টার জিয়ার কাছে টাঙ্গাইল শুধু একটি নির্বাচনী এলাকা নয়, এটি তাঁর নিজের ঘর। তিনি একটি শক্তিশালী জাতি গঠনের জন্য তিনটি স্তম্ভের ওপর জোর দিয়েছেন: আশা, উদ্ভাবন এবং জবাবদিহিতা- এই তিন স্তম্ভভিত্তিক উন্নয়ন চিন্তাই তাঁর মূল পরিকল্পনা। এছাড়া তার আরো পরিকল্পনা রয়েছে। যেমন, নিরাপদ টাঙ্গাইল: সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত একটি সম্পূর্ণ নিরাপদ এলাকা তৈরি করা, তরুন প্রজন্ম আজ মাদকের অন্ধকারচ্ছন্ন হাতছানিতে পথভ্রষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে দমনে সকল প্রকার আইনী পদক্ষেপ গ্রহণে তৎপর থাকা, ঘরে ঘরে গিয়ে ছোট শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করা। তারা যেনো মাদকের চোরাবালিতে নিমজ্জিত না হয়, কিশোর গ্যাং এ জড়িত হওয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখে, এজন্য প্রাণোজ্জ্বল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা, তারুণ্যের জন্য কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণ ও সুযোগ সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া, টাঙ্গাইল সদরের আধুনিকায়ন, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, যানজট নিরসনে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন এবং অবহেলিত এলাকায় ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করা, শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন করা, মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে তিনি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে রোগীদের বিনা পয়সায় ঔষধ দিচ্ছেন এবং ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিয়ে গিয়ে তাদেরকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তিনি প্রায় ১০০০ লোকের চক্ষু বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করে দিয়েছেন মেডিকেল চক্ষু ক্যাম্প এর ব্যবস্থা করে, চরবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা জরুরি, কারণ একুশ শতকেও তারা নগরায়ণের সুযোগ-সুবিধা থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করে আধুনিক সমস্ত সুবিধা তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং মূল স্রোতের অন্তর্ভুক্ত করা তাঁর অন্যতম হওয়া উচিত।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন না বরং মানুষের সুখ-দুঃখকে নিজের দায়িত্ব মনে করেন। পারিবারিক নির্যাতনের মধ্য দিয়েও জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতি তাঁদের অনড় অবস্থানই তাঁকে আরও মানবিক ও সাহসী নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছে।
ব্যারিস্টার জিয়া টাঙ্গাইলবাসীর প্রতি আহব্বান জানিয়ে বলেন, যদি আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান তাঁর হাতে ধানের শীষের প্রতীক তুলে দেন, তবে তিনি টাঙ্গাইলকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে যাবেন যেখানে উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সুযোগ সবার জন্য সমান হবে। তিনি শান্তি, উন্নয়ন, ন্যায়, আধুনিকতা এবং সম্মান সম্বলিত একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।